কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি:
কেশবপুরের রাজনৈতিক অঙ্গন, আইনজীবী সমাজ এবং সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নেওয়া সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও মানবিক একজন মানুষ—এডভোকেট বদরুজ্জামান মিন্টু। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর শোকের আবহ আরও গভীর হয়ে উঠেছে পুরো কেশবপুরজুড়ে।
দুপুর ২টা থেকেই কেশবপুর উপজেলা পাবলিক ময়দানে মানুষের ঢল নেমে আসে। রাজনৈতিক সহকর্মী, আইনজীবী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষ—সকলেই ছুটে আসেন প্রিয় মানুষের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।
মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক প্রবীণ কৃষক—চোখে পানি। তিনি বলেন,
“বদরুজ্জামান মিন্টুর মতো মানুষ আর হবে না। তিনি আমাদের কথা শুনতেন, আমাদের পাশে দাঁড়াতেন।”
সাদা কাফনের কাপড়ে মোড়ানো মরহুমের মরদেহ ঘিরে ছিল নীরব প্রার্থনা আর শোকাতুর মানুষের দীর্ঘ সারি। তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সততা, নীতিবোধ ও মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসার প্রতিফলন যেন ফুটে উঠেছিল এই জনসমাগমে।
জানাজায় হাজারো মানুষের অংশগ্রহণ
ঠিক দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে মাঠে অনুষ্ঠিত হয় তাঁর জানাজা। জানাজায় নেতৃত্ব দেন স্থানীয় আলেমরা। মাঠজুড়ে শোকাতুর মানুষের নিস্তব্ধতা যেন বলছিল—কেশবপুর আজ হারাল তার এক নিবেদিতপ্রাণ সন্তানকে।
আইনজীবী সহকর্মীদের একজন জানান,
“আদালতে তিনি ছিলেন ন্যায়পরায়ণতার প্রতীক। ব্যক্তিজীবনে ভদ্র, সংযত ও অত্যন্ত আন্তরিক মানুষ ছিলেন মিন্টু ভাই।”
জানাজা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর প্রিয় জন্মভূমি—বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে। পরিবার, আত্মীয়স্বজন, রাজনৈতিক সহকর্মী ও স্থানীয় মানুষের উপস্থিতিতে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
দাফনের মুহূর্তে স্বজনদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। এলাকার মানুষের অনেকে সেখানে দাঁড়িয়ে বলছিলেন—
“তিনি ছিলেন সবার আপনজন; কেশবপুরের মানুষের বড় ভরসা।”
যে কারণে এলাকার ভিন্ন রাজনৈতিক মতের মানুষও তাকে শ্রদ্ধা করতেন—সে হলো তাঁর অটল সততা ও মানবিক আচরণ। সামাজিক কাজে সবসময় ছুটে যেতেন। মসজিদ-বিদ্যালয় সংস্কার থেকে দরিদ্র মানুষের বিচার পাওয়ার সহায়তা—যেখানেই প্রয়োজন, সেখানেই পাশে থাকার চেষ্টা করতেন তিনি।
পরিবারের সদস্যরা বলেন,
“এই ভালোবাসা আমাদের কাছে অমূল্য। আল্লাহ যেন তাঁর রুহের মাগফিরাত দান করেন—এই দোয়া চাই সবাই।”